May 19, 2024, 6:16 am

মাছ ধরার কথা বলে নিয়ে ইজিবাইক চালককে হত্যা, দু’ঘাতক আটক

নিখোঁজের দু’দিন পর যশোরের বসুন্দিয়ার সদুল্লাপুরের একটি খাল থেকে নিখোঁজ ইজিবাইক চালক ইমনের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় পুলিশ মরদেহ উদ্ধারের পর পিবিআই পরিচয় শনাক্ত করে। এদিকে, হত্যায় জড়িত দু’ছিনতাইকারীকে আটক করা হয়েছে। মাছ ধরার কথা বলে ইমনের ইজিবাইক ভাড়া করে ছিনতাইকারীরা। সারাদিন সময় কাটিয়ে ওই ইজিবাইক ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে তারা। সন্ধ্যার পর তাকে জগন্নাথপুরের একটি বাগানে নিয়ে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর মরদেহ বস্তায় ভরে সদুল্লাপুরে এনে খালে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় তারা। আটকের পর এসব তথ্য জানিয়েছে ছিনতাইকারী চক্রের দু’সদস্য জগন্নাথপুরের মোশারফ ফকিরের ছেলে রাকিব হোসেন ও প্রেমবাগ বাবলাতলার নওয়াব আলীর ছেলে মিরাজ শেখ। ইমন অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নের আবুল কালামের ছেলে।
নিহতের পিতা আবুল কালাম জানান, গত ২৮ এপ্রিল ভোর ছয়টায় ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় ইমন। এরপর সে আর বাড়ি ফেরেনি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। ইজিবাইক স্ট্যান্ডে খোঁজ নিলে অন্য চালকরা জানায়, ইমনকে সবশেষে বসুন্দিয়ার দিকে ভাড়া নিয়ে যেতে দেখেছে তারা। এ ঘটনায় তিনি অভয়নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। সর্বশেষ,মঙ্গলবার সকালে পুলিশের কাছ থেকে ছেলের মৃত্যুর খবর জানতে পেরেছেন।
স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টায় খালপাড় থেকে তারা প্রচন্ড দুর্গন্ধ পায়। পরবর্তীকে তারা একটি বস্তায় ভরা এক যুবকের লাশ ভাসতে দেখে। পরে পুলিশকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে পুলিশ, পিবিআই, ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম ঘটনাস্থলে যায়। পরবর্তীতে পিবিআই সদস্যরা ফিঙ্গার প্রিন্ট ও ইমনের কাছে থাকা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করে।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গত ২৮ এপ্রিল নিখোঁজ হয় ইজিবাইক চালক ইমন। এ ঘটনায় অভয়নগর থানায় জিডি করা হয়। আজ মঙ্গলবার সকালে তার লাশ উদ্ধার হয়েছে। ইমনের পরিবারের সদস্যরা এসে লাশ শনাক্ত করেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ইজিবাইক ছিনতাই করতে হত্যা করা হয়েছে ইমনকে।
অন্যদিকে, পুলিশ আসামিদের আটকে অভিযানে নামে। কোতোয়ালি থানা পুলিশ ও ডিবির যৌথ অভিযানে মরদেহ উদ্ধারের দু’ঘন্টার মধ্যে হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়।
এ বিষয়ে ডিবির এসআই খান মাইদুল ইসলাম রাজীব বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আটক দু’আসামি জানায়, তারা পূর্বপরিচিত। এর আগে একবার ইমনের বাইক তারা ভাড়া করে। সারাদিন ঘুরে বেড়াই এবং মাছও ধরে। ওইদিনও মাছ ধরবে বলে আগে থেকেই ঠিক করে। এরপর ২৮ এপ্রিল সকালে বের হয় ইমন। পরে ওই দু’জন ইজিবাইক নিয়ে প্রথমে যায় ফতেপুরের নিমতলা নদীর পাড়ে। সেখানেই তারা সারাদিন কাটায়। সেখান থেকে সন্ধ্যায় রওনা দেয় তারা। জগন্নাথপুরে পৌঁছে ইমনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ সদুল্লাপুর এসে ফেলে দিয়ে ইজিবাইক নিয়ে চম্পট দেয়। পুলিশ নিহত ইমনের কাছে থাকা মোবাইল ফোনের কললিস্ট দেখে ওই দু’যুবকের জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে। এরপর ডিবির জ্জ্ঞিাসাবাদে হত্যার কাহিনী স্বীকার করে জবানবন্দি দেয় তারা। মঙ্গলবার রাতে এ খবর লেখা পর্যন্ত মামলার প্রস্তুতি চলছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :